হাঁস বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই পাওয়া যায়। সেজন্য হাঁসের প্রাচীনকাল থেকে হাঁসের মাংস সকলের কাছেই তুমুল জনপ্রিয়। খাস ফুডে আপনাদেরকে নিয়মিত উপহার দিয়ে যাচ্ছে পেকিং ও দেশি প্রজাতির হাঁস। যা পালন করা হয় মুক্ত পরিবেশে ও খাওয়ানো হয় প্রাকৃতিক খাবার। আমাদের দেশে নানা হাঁসের মাংসের অল্প কয়েকটা পদ তৈরি করা হয়। তবে অনেকেই জানেন না যে হাঁসের মাংসের অনেকগুলো পদ তৈরি করা যায়। তাইতো আজকে আপনাদেরকে হাঁসের মাংসের কয়েকটি রেসিপি সম্পর্কে জানাবো। চলুন তাহলে জেনে নেয়া হাঁসের মাংসের রেসিপি।
হাঁসের গ্রিল কাবাব
উপকরণ
একটা হাঁস,হাফ কাপ পেঁয়াজ বাটা,দুই চামচ আদা বাটা,দুই চামচ রসুন বাটা,ঝাল বুঝে লাল গুড়া মরিচ,এক চামচ হলুদ,গরম মশলা বাটা (চার/পাঁচটে এলাচি, কয়েক টুকরা দারুচিনি, জয়ত্রী, সামান্য জয়ফল ),এক চামচ জিরা,দুই চামচ টমেটো সস,ভিনেগার ২ চামচ,এক চামচ চিনি,এক চামচ কাবাব মশলা (বাজারে প্যাকেটে পাওয়া যায়)। এতে রং ও স্বাদ বেড়ে যাবে। এছাড়া পরিমাণ মতো লবণ ও পরিমাণ মতো তেল যোগ করতে হবে।
প্রস্তুত প্রণালি
হাঁস পরিষ্কার করে নিন। তারপর উপরে উল্লেখিত সব মশলা-পাতি দিয়ে (তেলসহ) ভালো করে হাসটি মেখে নিন। লবণ দিতে ভুলবেন না কিন্তু। হাঁসের ভিতরে বাইরে যেন ভালো করে মশলা লেগে যায়। এভাবে প্রায় ঘণ্টা খানেক রেখে দিতে পারেন। ম্যারিনেটেড হওয়ার জন্য। এতে করে মশলা মাংসে ভালো করে লেগে যাবে। চাইলে কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিতে পারেন। এবার একটা ফ্রাই প্যানে সামান্য তেল নিয়ে ভালো করে গরম করে হাঁসটিকে হালকা ভেজে নিন। এটা এজন্য যে, এতে হাঁসের মাংস নরম হয়ে যাবে ও স্বাদ বেড়ে যাবে। বেশি নয়, এপাশ ওপাশ করে হালকা ভাজা। এবার হাঁসটিকে ইলেকট্রিক ওভেনের ট্রেতে তুলে দিন। বেচে যাওয়া মশলাগুলো ফ্রাই প্যানের তেলে দিন এবং সামান্য কষিয়ে হাঁসের উপর বিছিয়ে দিন। এবার ওভেনে ২০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রটে ওভেনের মাঝামাঝি আধা ঘণ্টার জন্য দিন। মাঝে মাঝে দেখতে ভুলবেন না যেন। কেমন পোড়া পোড়া কাবাব বানাবেন এটা আপনার উপর নির্ভর করছে। মিনিট বিশেকে না হলে আরো কিছুক্ষণ রাখতে পারেন। বার দুয়েক খুলে তেল মশলা কাবাবের উপর দিয়ে দিন। মাংস নরম হল কি না তা দেখে নিন। ছুরি চামচ দিয়ে দেখতে পারেন। ভিতরে না বাইরে আরো আগুনের আঁচ লাগবে তা দেখে নিতে পারেন। যদি ভিতরে আগুনের আঁচের দরকার হয় তবে ট্রে নামিয়ে দিন। আর উপরে লাগলে ট্রে উপরে উঠিয়ে দিন। এতে সঠিক মাত্রায় কাবাবের চারপাশ নরম হয়ে যাবে। হাঁসের মাংস একটু শক্ত বলে নিজেই দেখে নিবেন। ব্যস, হয়ে গেল হাঁসের মাংসের গ্রিল কাবাব। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।
হাঁসের মাংসের কালিয়া–
উপকরণ
একটা হাঁস এক কেজি বা বেশী (চমড়াসহ),পেঁয়াজ কুঁচি হাফ কাপের বেশী,দারুচিনি এক ইঞ্চি, ৩/৪ পিস,আদা বাটা দুই টেবিল চামচ,রসুন বাটা দেড় টেবিল চামচ,লাল মরিচ গুঁড়া এক চা চামচ (ঝাল বুঝে),হলুদ গুঁড়া এক চা চামচের কিছু কম,লবণ পরিমাণ মতো (প্রথমে কম লবনেই শুরু করতে হবে),তেল পরিমাণ মতো (বা হাফ কাপের কম),পানি (অতিরিক্ত কিছু পানি গরম করে রাখাই উত্তম),বিশেষ মিক্স মশলা গুঁড়া,(নিচের মশলাগুলো কড়াইতে টেলে গুঁড়া করে নিতে হবে),জয়ত্রি সামান্য,জিরা দুই চিমটি,এলাচি মাঝারি ৪/৫ টা,লবঙ্গ ৮/৯ টা,শুকনা মরিচ ৩/৪ টা মাঝারি,মেথি দুই চিমটি,তেজপাতা বড় একটা,পাঁচ ফোঁড়ন দুই চিমটি,গোল মরিচ গুঁড়া দুই চিমটি,
প্রস্তুত প্রণালি
কড়াইতে তেল গরম করে প্রথমে পেঁয়াজ কুঁচি দিন, সাথে দিন সামান্য লবণ এবং দারুচিনি। ভাঁজুন, আগুন মিডিয়াম আঁচে রাখুন। পেঁয়াজ কুঁচি একটু হলদে হয়ে এলে আদা ও রসুন বাটা দিন এবং ভাঁজুন।এবার লাল মরচ গুঁড়া এবং হলুদ গুঁড়া দিন। এক কাপ পানি দিন এবং ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভালো করে কষালে তেল উপরে উঠে আসবে। তেল উপরে উঠে এলে ধুয়ে রাখা হাঁসের মাংস দিয়ে দিন।ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। আগুন মিডিয়াম আঁচে থাকবে। কিছুক্ষন পরে এক কাপ গরম পানি দিন এবং আবারো মিশিয়ে নিন।মাংস নরম না হলে আরো এক কাপ পানি দিতে পারেন এবং আগুন মাধ্যম আঁচে রেখে ঢাকনা দিন। চুলার ধার ছেড়ে যাবেন না, মাঝে মাঝে নাড়িয়ে দিন।তবুও মাংস নরম না হলে আবার গরম পানি দিতে পারেন। এবার সেই বিশেষ মিক্স মশলা দিয়ে দিন এবং ভালো করে নাড়িয়ে মিশিয়ে নিন।ঢাকনা দিয়ে মাঝারি আঁচে রাখুন আরো কিছু সময়। একটু শুকনো মাখা মাখা হলে খেতে বেশি স্বাদ হয়। এবার চুলা থেকে নামিয়ে কিছু সময়ের জন্য রাখুন। পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত।