খাদ্যের গুনাগুণ, শীতের আয়োজন

পুষ্টির ভাণ্ডার, খাস এনার্জি বুস্টার

Khaas Food Honey Nuts

এনার্জি বুস্টার বা হানি নাটস হচ্ছে বিভিন্ন বাদাম, বীজ, খেজুর ও মধুর মিশ্রণে তৈরি চমৎকার এক স্বাস্থ্যকর খাবার যা বর্তমানে বিভিন্ন বয়সীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়ই বলা যায়। এর স্বাদ ও পুষ্টিমান একে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। এই খাবারটিকে এনার্জি বুস্টার কেনো বলা হচ্ছে এবার সেই বিষয়ে আসা যাক। 

 

এনার্জি বুস্টারের ইতিকথা  

যেকোন নতুন ধরনের খাবার সকলের জন্য আনার আগে অনেক ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন। ব্যবহৃত উপকরণের অনুপাত, স্বাদ, পুষ্টিমান ইত্যাদি বিবেচনায় রেখেই প্রস্তুত করা হয় নতুন এক খাবার। খাস এনার্জি বুস্টারও এর ব্যতিক্রম নয়। দিনের অনেকটা সময় অফিস, পড়াশোনা বা রাস্তার জ্যমে জর্জরিত ব্যক্তিদের শক্তি বা কর্মস্পৃহা দিনের শুরুতে যেমন থাকে, আস্তে আস্তে দিন বাড়ার সাথে সাথে স্তিমিত হয়ে আসে। কিন্তু ব্যস্ততা তো আর থেমে থাকে না। আর তখনই অনুভুত হয় যে এমন কিছু চাই যা ক্ষিদে মেটাবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে, সাথে শক্তির যোগানও দিবে ষোল আনা। 

 

তবে অনেক খাবারই আমাদের শক্তি যোগালেও কেনো একে আলাদা করে এনার্জি বুস্টার বলা হচ্ছে না নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগাতেই পারে। আদতে বর্তমানের ঘড়ির কাঁটার সাথে পাল্লা দিয়ে চলা জীবনে আমরা সবকিছুতেই যেনো শর্টকাট খুঁজে ফিরি। এই শর্টকাট খুঁজতেই এমন এক খাবারের ধারণা মাথায় আসে যা কিনা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের পুষ্টির ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে, পাশাপাশি আমাদের শক্তির যোগান দিয়ে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করবে। সেই ধারণা থেকেই তৈরি করা হয় খাস এনার্জি বুস্টার। 

 

উপকরণ 

খাস এনার্জি বুস্টারের মূল উপকরণ হচ্ছে সুন্দরবনের মধু, কালিজিরা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম যেমন – চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম সহ অন্যান্য বাদাম, মরিয়াম ও খুরমা খেজুর, ত্বীন ফল, তিল ও কুমড়া বীজ। 

 

কেনো খাবেন খাস এনার্জি বুস্টার?  

এনার্জি বুস্টারের উপকারিতা বলতে যেনো শুধু শক্তি যুগিয়ে চাঙ্গা করার ব্যাপারটাই মাথায় খেলে। কিন্তু এতে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি উপাদান এই খাবারটিকে করে তুলেছে দারুন এর স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস। এবার জেনে নেওয়া যাক কীভাবে খাস এনার্জি বুস্টার সুস্থতায় ভূমিকা রাখে। 

 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

এতে ব্যবহৃত মধু, কালিজিরা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও বীজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। 

 

পুষ্টির আধার

 এতে বিদ্যমান মধু, কালিজিরা ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও বীজে আছে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন ও মিনারেল। মধুতে আছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম এর মতন গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কাঠবাদামে আছে ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। পাশাপাশি পেস্তাবাদামে আছে ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৬, ফসফরাস। আর কাজুবাদামে আছে ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। তাছাড়াও এনার্জি বুস্টারে আছে তিল বীজ ও কুমড়া বীজ। একই সাথে এই বাদাম ও বীজগুলো মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড ও ফাইবার সমৃদ্ধ। 

 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত

 এনার্জি বুস্টারে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের দেহেকে ক্ষতিকর মুক্ত মূলকের হাত থেকে রক্ষা করে। একই সাথে ত্বক ভালো রাখে এবং বলিরেখা কমায়।

 

ক্যালরি যোগায়

এতে বিদ্যমান মধু, খেজুর, বাদাম ও বীজ আমাদের দেহে ক্যালরির যোগান দেয়। যা আমাদের কাজের জন্য শক্তি যোগায়। এতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট মিলিয়ে সর্বমোট ৪০০ কিলো ক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। 

 

হৃদপিন্ডের জন্য ভালো

 গবেষণায় দেখা গিয়েছে কালিজিরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে। আর বাদামে আছে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা হৃদপিন্ডের জন্য ভালো। কুমড়া বীজে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়ামও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরল কমানোর মাধ্যমেও হৃদপিন্ডকে সুরক্ষিত রাখে। তাছাড়া মধু ও তিল বীজও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে। আর খাস এনার্জি বুস্টারে রয়েছে এই সকল উপাদানের সঠিক মাত্রায় সংমিশ্রণ। তাই এটি হৃদপিন্ড সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে। 

 

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

 এতে ব্যবহৃত মধু, কালিজিরা, বাদাম ও বীজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস তা আমরা আগে জেনেছি। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। 

 

পরিপাকতন্ত্রের জন্য উত্তম

বাদাম ও বীজ ফাইবারের ভালো উৎস। আর এই ফাইবার আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্য ভালো। 

 

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি

এতে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদানই আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। নিয়মিত সেবনে অবসাদ, ক্লান্তি ছুটে পালাবে আর আপনাকে করে তুলবে আরও অ্যাক্টিভ। 

 

অহেতুক ক্ষুধা মিটাতে সক্ষম

এতে ব্যবহৃত উপাদানগুলো ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় গ্রহণের পর অনেকটা সময় পেট ভরা ভরা লাগে। তাই অহেতুক খাবার গ্রহণের ইচ্ছা অনবদমিত হয়। ফলে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের মাত্রা অনেকটাই কমে আসে। 

 

কীভাবে গ্রহণ করবেন?

এবার আসা যাক কীভাবে এই পুষ্টিকর খাবারকে গ্রহণ করবেন। অনেকেই ভেবে থাকেন যে সকালে বা রাতে বা দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় ছাড়া গ্রহণ করা যাবে না। বা করলেও তাতে তেমন একটা সুফল মিলবে না। আদতে তেমন কিছু নয়। আপনার যখন ইচ্ছে তখনই আপনি গ্রহণ করতে পারেন এই খাবারটি। ছোট একটা বাটি বা বয়ামে করে রেখে দিতে পারেন আপনার অফিস ডেস্ক বা ব্যাগে। ক্লান্তি এসে ভর করলে বা হুটহাট খিদে নিবারণের জন্য টুক করে বের করে এক চামচ খেয়ে নিতে পারেন। ব্যস, এনার্জিও জুটলো আবার একই সাথে ক্ষিদে নিবারণ হলো স্বাস্থ্যকর উপায়ে। চাইলে সকালের নাস্তায় ওটস বা কর্নফ্লেক্স এর সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন। এতে যেমন স্বাদে বৈচিত্র্য আসে ঠিক তেমনি স্বাস্থ্যকর উপায়ে দিনের শুরুটাও করা যায়। 

 

কেনো খাস এনার্জি বুস্টার সেরা?

বাজারে অনেক ধরনের হানি নাটস এর সন্ধান মিললেও অনেকেরই এই নিয়ে সংশয় দানা বাঁধে। কেননা যদি এতে ব্যবহৃত উপাদানগুলো, যেমন মধু, বাদাম, বীজ, খেজুর ইত্যাদি ভালো মানের না হয় তবে সার্বিকভাবে এই খাবারের পুষ্টিমান কমার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে এখানে খাস ফুড ব্যতিক্রম। খাস এনার্জি বুস্টারে ব্যবহার করা হয় প্রাকৃতিক মধু, নিজস্ব তত্বাবধানে সংগৃহীত বাদাম, বীজ, কালিজিরা ও খেজুর। আর তৈরি এবং প্যাকেটজাত করা হয় নিজস্ব কর্মী দ্বারা সম্পূর্ণ নিরাপদ পরিবেশে। তাই এতে ভেজাল মিশ্রিত হওয়ার সুযোগ নেই। 

 

সুস্বাস্থ্যের জন্য আমরা কত কিছুই তো করি। তবে কেনো ভেজালের ভিড়ে নিজেকে হারাবেন বলুন? সুস্থতা নিশ্চিত করুন প্রাকৃতিক উপাদানের সংমিশ্রণে তৈরি খাবার দিয়েই। তবেই তো থাকা যাবে সুস্থ ও নিরাপদ। 

Leave a Reply