খিলগাও মডেল স্কুলে আমের উপকারিতা নিয়ে একদিন কথা বলেছিলেন স্যার মোরশেদ আলি।
ঢং ঢং করে স্কুলের ঘন্টা বাজলো। পঞ্চম শ্রেণীর বিজ্ঞান ক্লাস নিতে ক্লাসরুমে ঢুকলেন মোরশেদ আলী। ঢোকার সাথে সাথে বাচ্চারা যে যত জোরে পারে এক সাথে “গুড মর্নিং স্যার” বলে স্বাগত জানালো তাঁকে!
– বাচ্চারা, তোমরা সবাই জানো, গরমকাল চলে এসেছে।
– জ্বি স্যার!
– গরমকালে কি কি পাওয়া যায় জানো?
– অনেক রকম ফল পাওয়া যায় স্যার!
– বাহ! বল তো কি কি ফল পাওয়া যায়? আচ্ছা সেকেন্ড বেঞ্চের তুমি বল।
– স্যার আম পাওয়া যায়, কাঁঠাল পাওয়া যায়, জাম পাওয়া যায়, তরমুজ পাওয়া যায়!
– বাচ্চারা, তোমরা কোন ফল খেতে সবচেয়ে বেশী পছন্দ কর এসব ফলগুলোর মধ্যে?
– আম খেতে পছন্দ করি স্যার!
– আচ্ছা। তোমরা কি জানো পাকা আম খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়?
– জ্বি না স্যার!
– ঠিকাছে! তাহলে আজকে আমরা পাকা আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানবো!
আম কেন খাবেন? আমের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ কি কি?
১. পাকা আম আমাদের ত্বক কে সুন্দর, উজ্জ্বল ও মসৃণ করে। শুধু তাই নয়, এটি আমাদের ত্বকের ভেতর ও বাইরে থেকে উভয়ভাবেই সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। আম আমাদের ত্বকের লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও ব্রণের সমস্যা সমাধানে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. গাছপাকা আমে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ লবণের উপস্থিতিও রয়েছে । আমাদের শরীরের দাঁত, নখ, চুল ইত্যাদি মজবুত করার জন্য আমের খনিজ লবণ উপকারী ভূমিকা পালন করে।
৩. সাধারণত পাকা আম ত্বকের লোমের গোড়া পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ফলে মুখের ও নাকের উপর জন্মানো ব্ল্যাকহেড দূর করতে অনেকাংশে সাহায্য করে। আপনি যদি প্রতিদিন ১০০ গ্রাম পাকা আম খান তাহলে আপনার মুখের কালো দাগ দূর হবে।
৪. আমের উপকারিতা গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আমের পুষ্টি উপাদান। পাকা আমের আঁশে কিছু উপাদান যেমন- ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ থাকায় তা হজমে সহায়তা করে থাকে। আমে আছে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম এটা আমাদের শরীরের প্রোটিন অণুগুলো ভেঙ্গে ফেলতে সাহায্য করে যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৫. আমে প্রায় ২৫ রকমের বিভিন্ন কেরাটিনোইডস উপকারী ব্যাকটেরিয়া আছে যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সুস্থ ও সবল রাখে।
৬. আমে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন- বি কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন আমাদের শরীরের স্নায়ুগুলোতে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরকে রাখে পুরোপুরি সতেজ। যার ফলে খুব দ্রুত ঘুম আসতে সাহায্য করে।
৭. আমে রয়েছে বেটাক্যারোটিন, ভিটামিন ই এবং সেলেনিয়াম। এসব উপাদান পরিমাণে পর্যাপ্ত থাকায় পাকা আম হার্টের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।আমাদের হার্টকে সুস্থ ও সবল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৮. আপনি যদি প্রতিদিন এককাপ আম খেতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরে ভিটামিন ‘এ’ এর চাহিদার প্রায় পঁচিশ শতাংশের যোগান দিতে পারবে। ভিটামিন ‘এ’ আমাদের চোখের জন্য খুবই উপকারী। এটি আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে।
৯. আমে প্রচুর পরিমাণে এসিড থাকে যেমন- টারটারিক এ্যাসিড, ম্যালিক এ্যাসিড ও সাইট্রিক এ্যাসিড যা আমাদের শরীরে অ্যালকালাই বা খার ধরে রাখতে সহায়তা করে অনেকাংশেই।
১০. আমের মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কিনা শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। স্তন, লিউকেমিয়া, কোলন প্রোস্টেট ক্যান্সারের মত মারাত্মক ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে প্রয়োজনীয় এনজাইমও পাওয়া যায়।
১১. পাকা আম পটাশিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আমদের হার্টবিট ও রক্তস্বল্পতা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। আমাদের হার্টবিটকে সচল রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
১২. পাকা আম আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কারে সহায়তা করে। আমের মধ্যে থাকা টারটারিক, ম্যালিক ও সাইট্রিক এ্যাসিড শরীরে অ্যালকোহল ধরে রাখতে সহায়তা করে।
১৩. আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, পাকা আমের তুলনায় কাঁচা আমে ভিটামিন-সি এর পরিমাণ বেশি। যা আমাদের দাঁত ও হাড় গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১৪. আম আমাদের শরীরের ক্ষয়রোধ করে। প্রতিদিন আম খেলে দেহের ক্ষয়রোধ হয় এবং স্থূলতা কমিয়ে শারীরিক গঠনে ইতি বাচক ভূমিকা পালন করে।
১৫. শুধু তাই নয়, আমের ভেষজ গুণ আমাদের স্কিন ক্যান্সারসহ ভিভিন্ন জটিল রোগ থেকে রক্ষা করে।
১৬. আমে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ সেই সাথে আরো আছে ফাইবার যা সিরাম কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়, বিশেষ করে রক্তে উপস্থিত খারাপ কোলেস্টরল যেমন কম ঘনত্বের লাইপোপ্রটিন এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
অতএব বুঝতেই পারছেন আমের উপকারিতা অপরিসীম। আসছে আমের সিজন। অবশ্যই আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা আম খাবেন। তবে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত আম খেতে হবে। বাজারের ফরমালিন যুক্ত আমের উপকারিতা থেকে অপকারিতাই বেশি। এই বিষয়ে সাবধান হবেন।
ক্ষতিকর কেমিক্যাল মুক্ত গাছপাকা আম খেতে চান?
আপনারা জানেন যে বাংলাদেশের আমের সিংহভাগ উৎপাদিত হয় উত্তর বঙ্গে। ফলে ঐ অঞ্চল ব্যতিত দেশের অন্যান্য যায়গার মানুষের পক্ষে গাছপাকা কেমিক্যাল মুক্ত আম পাওয়া বেশ কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে খাসফুড অনলাইন শপ প্রতিবছর সারাদেশে সুস্বাদু ও নিরাপদ আম সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আমরা সরাসরি রাজশাহী থেকে গাছ পাকা আম এনে গ্রাহকদের মাঝে সুলভ মূল্যে সরবরাহ করে থাকি। আপনি যদি ফর্মালিন মুক্ত আম কিনতে ইচ্ছুক হন, তাহলে আজই অগ্রিম অর্ডার করুন। নির্দিষ্ট সময়ে আমরা আম পৌঁছে দেবো আপনার ঠিকানায়।
বর্তমানে আমরা হিমসাগর (সাতক্ষীরা) আমের প্রি অর্ডার নিচ্ছি, অর্ডার করতে ক্লিক করুন এখানে
———————–