আমরা গত পর্বে বেশ কিছু পরীক্ষার কথা বলেছি যেগুলোর মাধ্যমে আসল মধু ও খাটি মধু নির্ণয় করতে গিয়ে ক্রেতা ভাইয়েরা চরমভাবে ধোকার স্বীকার হচ্ছি যা তারা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারছেনা। আর এখন সেসকল পরীক্ষার মাধ্যমে আসল বা খাটি মধুকেই তারা ভেজাল মধু প্রমাণ করছে। আজ আমরা এইরকম আরো কিছু পরীক্ষার কথা আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরবঃ
যারা পর্ব ১ পড়েন নি, তাদের জন্যঃ খাঁটি এবং প্রাকৃতিক মধু চেনা নিয়ে মধুর বিড়ম্বনা (পর্বঃ ১)
ভেজালমুক্ত প্রাকৃতিক মধু চেনার উপায়
- খাঁটি মধু পানিতে মিশে না। এটা পরীক্ষা করার জন্য আমাদের কোয়ালিটি কন্ট্রোল এক্সিকিউটিভ তাঁর ল্যাবে চিনির সিরা এবং মধুর একটা মিশ্রণ তৈরি করে তা পানির গ্লাসে মিশিয়ে পানির গ্লাসে ঢেলে পরীক্ষা করে দেখলেন। ফলাফল দেখা গেল মধু খুব সুন্দর করে পানির সাথে মিশে গেল আর চিনির সিরা গ্লাসের নিচে গিয়ে জমা পড়ল; এতটুকু পানির সাথে মিশল না। এটাতো স্বাভাবিক ভাবে চিনির সিরা যদি জ্বাল দিয়ে ঘন করা হয় তাহলে পানির সাথে মিশবে না। এতে আমরা বুঝলাম, এই পরীক্ষায় চিনির সিরা পাশ করে গেলেও খাঁটি মধু সবসময় পাশ নাও করতে পারে।বিষয়টা হল যে এভাবে খাঁটি মধু নির্ণয় করা যাবেনা।
- প্রাকৃতিকগত ভাবেই কিছু কিছু মধু পাতলা হয় সেই মধু যদি এই সকল পরীক্ষা করা হয় পানির গ্লাসে ও হাতে বৃদ্ধাংগুলির নখের উপর দিল পরীক্ষা করলে কখন সঠিক রেজাল্ট পাওয়া যাবেনা। পাতলা মধুটাকে যদি হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখের উপর দেওয়া যায় সেটা অবশ্যই পড়ে যাবে থাকবেনা। চাষের মধু অনেক সময় পাতলা হওয়ার কারণ হল, মৌচাক হতে যখন মধু সংগ্রহ করা হয় সেখানে একটা নিদিষ্ট সময় লাগে মৌমাছিদের পুষ্প রস থেকে মধু তৈরি করতে সময়ের কম বেশি হওয়ার কারণে অনেক সময় মধু কম ঘনত্ব বা পাতলা হয়। যেমনঃ সুন্দরবনের ফুলের মধু, বরই ফুলের মধু প্রাকৃতিকগত ভাবেই পাতলা হয়।
- খাঁটি মধুতে পিপড়া ধরেনাঃ মিষ্টি বস্তুতে পিপড়া ধরবেনা এটাতো কল্পনা করা যায় না, পিপড়া ওই সকল জায়গায় বেশি আকৃষ্ট যেখানে সুক্রোজ ও গ্লুকোজ থাকে। মধুর প্রধান দুইটা উপাদান হল সুক্রোজ ও গ্লুকোজ।
মৌমাছিকে চিনি খাওয়ানোর বিষয়টা বাস্তবঃ
চায়ের দোকানে কিংবা মিষ্টির দোকানে প্রায়শই দেখে থাকবেন মৌমাছির আনাগোনা। মৌমাছিগুলো কী করে ওখানে? হ্যা, মৌমাছিরা চিনি থেকে তরল অংশ বা লিকুইড চিনি শুষে নেয়। প্রকৃতিতেই আমরা মৌমাছির এই চিনি গ্রহণের ব্যাপারটা হরহামেশাই দেখে থাকি, তাই নয় কি?
মৌ চাষের ক্ষেত্রে মৌমাছিদের প্রয়োজনে নানা উপায়ে চিনি খাওয়ানো হয়, কিন্তু সেটা অফ সিজনে। যখন প্রকৃতিতে তেমন একটা ফুলের সমারোহ থাকে না তখন মৌমাছির কলোনিগুলোকে কোন স্থানে রেখে দিয়ে তাদের খাবার হিসেবে চিনিসহ আরও অনেক কিছু খাওয়ানো হয়।
- প্রকৃতিতে মধুর প্রাচুর্যতা না থাকলে মৌমাছিরা নিজেদের খাদ্য হিসেবে নিজেরাও চিনি গ্রহণ করে।
- ক্রমাগত বৃষ্টি থাকলে বা আবহাওয়া খারাপ থাকলে চিনি বা গুড় থেকে মৌমাছিরা খাবার সংগ্রহ করে থাকে।
- মৌ-কলোনি স্থানান্তরের অবহিত পর প্রাথমিকভাবে খাবারের উৎস হিসেবে বিশেষভাবে চিনি সরবরাহ করা হয়।
- কোন কোন ক্ষেত্রে ঔষুধ প্রয়োগের সময়ও চিনি খাওয়ানোর প্রয়োজন পড়ে।
আর যখন প্রকৃতিতে মধুর প্রাচুর্যতা থাকে তখন মৌমাছি চিনি বা অন্য কোন খাবার গ্রহণ করে না, কারণ তখন তারা ফুল থেকে পুষ্পরস বা নেকটার সংগ্রহ করতেই ব্যস্ত থাকে। এসব আলোচনা থেকে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, মধুতে চিনি থাকতে পারে, আর সেই মধুতে পিঁপড়াও আকর্ষিত হতে পারে। তাই এই ধরণের প্রচলিত বিশ্বাসগুলো খাঁটি মধুর মান নির্ধারণে সক্ষম নয়।
আপনাদের যদি কখনো সুযোগ হয় একদম নিজের সামনে চাকে ভাঙ্গা মধু নিয়ে পরীক্ষাগুলো করে দেখবেন। অসাধু ব্যবসায়ীরা মধুতে বিভিন্ন ভেজাল মিশিয়ে সহজেই আপনার এই পরীক্ষাগুলো উত্তীর্ণ হতে পারে। এই বিষয়ে আপনারা কোন মধু চাষী অথবা কোন মধু বিশেষজ্ঞ থেকে জানতে পারেন।
খাঁটি মধু পাবেন কোথায়?
আলহামদুলিল্লাহ্, বাজারের অনেক অনেক মধুর ভীড়ে আসল-নকল যখন চেনা দায় তখন Khaas Food পরিবার চেষ্টা করছে আসল স্বাদের, ভেজালমুক্ত সুন্দরবনের মধু সরবরাহ করতে। বিশ্বস্ত মৌয়াল দ্বারা সংগ্রহ করা এ মধু আমরা নিজেরা ও যারা আসল মধু চেনেন সেই সকল মানুষদের খাইয়ে, তাঁদের পরামর্শে আপনাদের জন্য ঢাকায় নিয়ে এসেছি।
ভেজালমুক্ত খাবার কোথায় পাবেন- এই নিয়ে যারা চিন্তিত; বাংলাদেশের একমাত্র নিরাপদ খাবারের অনলাইন শপ খাসফুড আছে তাদের পাশে। সুন্দরবনের মধু সহ বিভিন্ন প্রকারের খাঁটি মধু পেতে আজই ভিজিট করুন www.khaasfood.com এ।
আরও পড়ুন
কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী মধুর উপকারিতা