খাদ্যের গুনাগুণ

মধু নিয়ে মধুর আলাপঃ পর্ব ২

আল্লাহ তা’আলা আল কোরআনের মধ্যে অন্যান্য সমস্ত জীব- জন্তুর মধ্য হতে ছোট্ট প্রাণী মৌমাছিকে স্বতন্ত্র ভঙ্গিতে সম্বোধন করেছেন। কারণ মৌমাছি সমস্ত কীটপতঙ্গের মধ্যে বিশেষ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। মৌমাছি একমাত্র প্রাণী যে মানুষের জন্য খাদ্য তৈরি করে। আল্লাহ তা’আলা সুরা নাহলে বর্ণনা করেছেন- “তার পেট হতে বিভিন্ন রঙের পানীয় বের হয় তাতে মানুষের জন্য রয়েছে রোগের প্রতিকার”।

মৌমাছি নিজের বাসাটিকে সমান ছয় কোণ বিশিষ্ট করে তৈরি করে। গোলাকার প্রাণীর জন্য সম ছয় কোণ বিশিষ্ট কোঠার আয়তন গোলাকার কোঠার চেয়ে কম। এটা জ্যামিতিক শাস্ত্র প্রমাণ করেছে। কাজেই মৌমাছি নিজের বাসা এমনভাবে তৈরি করে যাতে একটু জায়গাও নষ্ট না হয়। মৌমাছি এমনই একটি বুদ্ধিমান প্রাণী।

মধু কেনো খাবেন?

ঠাণ্ডা জনিত কফ বা কাশি রোগে এক কাপ গরম পানির সাথে ১/২ চামচ মধু মিশ্রিত করে নিয়মিত খাওয়ালে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আমেরিকায় শিশুদের নিয়মিত মধু খেতে দেয়া হয়। মিশিগানে প্রচুর মধু পাওয়া যায়। অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ বাদ দিয়ে এক অর্থবছরে আমেরিকা সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মধু বহির্বিশ্ব হতে আমদানি করে।

আরবরা প্রচুর মধু খায়। আরবিতে মধুকে ‘আসল’ বলে। পাকিস্তান ও ইন্ডিয়াতে মানুষ বিভিন্ন চিকিৎসায় মধু ব্যবহার করে। উর্দুতে মধুকে ‘সহদ’ বলে। বার্মিজরা মধুকে ‘পিয়ায়ি’ বলে। বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে মধু উপহার দেয়াকে তারা বেশি পছন্দ করে। রাশিয়ানরা মধুকে [passster password=”123456″]

‘মিউদ’ বলে। তারা মধু খাওয়াকে খুব পছন্দ করে। আফগানরা মধুকে ‘গাভিন’ বলে এবং এর খুব কদর করে। থাইল্যান্ডে প্রচুর মধু পাওয়া যায়। তারা একে ‘নামপুং’ বলে। চাইনিজ মুসলিমরা ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা মধু খেয়ে থাকেন। তারা মধুকে ‘ফনমি’ বলে। মধুর সংস্কৃত নামান্তর ‘ক্ষৌদ’। এভাবেই উন্নত বিশ্ব মধ খাওয়ার প্রতি জোর দিয়েছে। রাসূল সঃ ও মধু পছন্দ করতেন খুব। তিনি নিজেও ঘোষণা করেছে মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের মহৌষধ হচ্ছে মধু।

আরো জানতে চান? কেবল ক্লিক করুনঃ

https://www.facebook.com/khaasfood/photos/a.840398386045856/2274769282608752/?type=3&theater

https://www.facebook.com/khaasfood/photos/a.877565352329159/2145441312208217/?type=3&theater

https://www.facebook.com/khaasfood/photos/a.840398386045856/1877654042320280/?type=3&theater

https://www.facebook.com/khaasfood/photos/a.840398386045856/1517654708320217/?type=3&theater

https://www.facebook.com/khaasfood/photos/a.840398386045856/1514948821924139/?type=3&theater

মধুর অজানাকে জানা।

সুন্দরবন হতে বাংলাদেশে প্রচুর মধু সংগৃহীত হয়। ফেব্রুয়ারি হতে এপ্রিল মাস মধু সংগ্রহের উৎকৃষ্ট সময়। সরকারী পারমিটের মাধ্যমে মৌয়ালরা নৌকা নিয়ে দল বেঁধে বনের ভেতর থেকে মধু সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বিসিক সহ ইত্যাদি বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানের পৃষ্টপোষকতায় আমাদের দেশে প্রচুর মৌখামারী তৈরি হয়েছে। মৌখামারীদের থেকে সরাসরি মধু কেনা সবচেয়ে নিরাপদ। সুতরাং, বাংলাদেশে চাষ ও আচাষ, দুই ধরনের মধুই বিদ্যমান।

মধু কখন খাওয়া যায়?

আমাদের দেশে প্রচলিত একটি মিথ্যা হচ্ছে যে, মধু গরম জিনিষ তাই গ্রীষ্মকালে খাওয়া যাবে না, এটা কেবল শীতকালে খাওয়া যাবে। এটা ভুল ধারণা। ১২ মাসই মধু খাওয়া যায়। গরমের সময় শরীর থেকে ঘামের সাথে পানি বের হওয়ার ফলে শরীর দুর্বল হতে পারে। নিয়মিত মধুপান শরীরকে দুর্বল হওয়া থেকে রক্ষা করবে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন মধুর বৈশিষ্ট্য

সরিষা ফুলের মধু– সাদাটে, খুব ঘন, পুরো মধুটাই জমে যেতে পারে বা স্ফটিকায়িত হতে পারে। শীতকালে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ও কম খরচে সংগ্রহ করা হয়।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
সরিষা 3.93 258 129 80.80 <5.00 951

ধনিয়া ফুলের মধু– ক্রিমি সাদাটে রং, আংশিক জমে যেতে পারে। এর সাথে খেসারি, সাজনা এবং সরিষা ফুলের নেকটার থাকতে পারে।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
ধনিয়া 4.70 2910 1455 74.4 <5.00 1608

কালিজিরা ফুলের মধু– কালচে রং, সহজে স্ফটিকায়িত হয় না। কিছুটা গুড়ের ঘ্রাণ থাকে। এই মধুর সাথে পেঁয়াজ ও শিমুলের নেকটার থাকতে পারে।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
কালিজিরা 4.81 3160 1580 72.45 <5.00 3950

লিচু ফুলের মধু– সবুজাভ সাদাটে রং, ঘন হয়, জমে যেতে পারে বা স্ফটিকায়িত হতে পারে। অনেক দিন রেখে দিলে হালকা তেঁতো স্বাদ অনুভুত হয়। এ মধুর সাথে ভাঁটি ফুলের নেকটার থাকে।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
লিচু 4.22 982 491 80.45 <5.00 1663

 

খলিসা ফুলের মধু– এটি ম্যানগ্রোভ বনের অর্গানিক মধু, পাতলা হয়, বুনো ঘ্রাণ থাকে। সাদাটে লালচে রং, ঘোলা হয়। স্ফটিকায়িত হতে দেখা যায় না। মধুর উপরের তলে পোলেনের পুরু স্তর দেখা যায়। এর সাথে গরান, কেওরা, হরগোজা, পশুর, মঠ গরান ও কাঁকড়া ফুলের নেকটার থাকে।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
খলিসা 3.99 402 201 73.40 <5.00 1707

গরান ফুলের মধু– এটি ম্যানগ্রোভ বনের অর্গানিক মধু, পাতলা হয়, বুনো ঘ্রাণ থাকে। লালচে বাদামি রং, ঘোলা হয়। স্ফটিকায়িত হতে দেখা যায় না। মধুর উপরের তলে পোলেনের পুরু স্তর দেখা যায়। এর সাথে খলিসা, গেওয়া, কেওরা, হরগোজা, পশুর, মঠ গরান ও কাঁকড়া ফুলের নেকটার থাকে।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
গরান 4.20 808 404 74.40 <5.00 1813

 গেওয়া ফুলের মধু– এটি ম্যানগ্রোভ বনের অর্গানিক মধু। বর্ষাকালে পাওয়া যায়, তেঁতো স্বাদ, পাতলা হয়, বুনো ঘ্রাণ থাকে। বাদামি রং, ঘোলা হয়। স্ফটিকায়িত হতে দেখা যায় না। মধুর উপরের তলে পোলেনের পুরু স্তর দেখা যায়। এর সাথে খলিসা, গরান, কেওরা, হরগোজা, পশুর, মঠ গরান ও কাঁকড়া ফুলের নেকটার থাকে।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
গেওয়া 4.08 735 368 71.30 <5.00 6577

বরই ফুলের মধু– পাতলা, সবুজাভ সাদাটে রং।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
বরই 5.07 1822 911 77.45 <5.00 1762

জলপাই ফুলের মধু– সবচেয়ে কম ব্রিক্স সমৃদ্ধ মধু। প্রচুর ময়েশ্চার থাকে এবং সবুজাভ কালচে রং।

মধু pH Conductivity
us/Cm
T.D.S
mg/L
Brix Sucrose Color
জলপাই 4.07 1172 586 68.15 <5.00 19044

 

  • ময়েশ্চারের আধিক্য রয়েছে এরূপ মধুর বোতলে ফারমেন্টেশন এর কারণে বাতাস জমে ফুলে যেতে পারে।
  • ঝাঁকালে ফেনা হয়ে অনেক সময় উথলে উঠতে পারে।

কি ভাবছেন?? এবার তাহলে মধু কিনা যায়। মধু সম্পর্কে সব জ্ঞান নখদর্পণে। অর্ডার দিয়ে ফেলুন কোন বিশ্বস্ত কোম্পানিতে।

মধুর খাঁটিত্ব নিয়ে কোন ভাবে কনফিউজড হলে সেই কোম্পানির সাথে চলে যান তারা যেখান থেকে মধু সংগ্রহ করে সেখানে। যদি আপনাকে সাথে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে তাদের বিশ্বস্ততা সন্দেহের চোখে দেখতেই পারেন।

আমাদের খাস ফুড এ বিষয়ে উদার। আপনি চাইলেই যে কোন সময় চলে যেতে পারেন আমাদের চাষীর কাছে। শুনে আসতে পারেন তাদের জীবনের গল্প। আর চেখেও আসতে পারেন খাস ফুডের মধু কতটুকু খাঁটি।

মধু নিয়ে মিষ্টি কথার পাশাপাশি তিক্ত সত্য গুলো জানা উচিৎ। কারণ মধুর এত এত উপকারিতা থাকতেও কোন কাজে আসবে না যদি না খাঁটি মধু খেতে পারেন।

মধু নিয়ে উপরোক্ত সাতকাহন পাঠিয়ে দিতে পারেন আপনার পরিচিতদের কাছেও। তাঁরাও যেন সচেতন হয়ে বিশুদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে পারেন সেটা নিশ্চিত করা আপনারও দায়িত্ব। আপনি যেটা জানেন সেটা অন্যদেরকেও জানিয়ে দিতে বলেছেন নবী করীম (সঃ)। সুতরাং শেয়ার করুন আপনার শুভানুধ্যায়ীদের কাছেও।

[/passster]

Leave a Reply